Lack of Development in the Krishna-Balaram Temple of Narayanpur / নারায়ণপুরের কৃষ্ণবলরাম মন্দিরে উন্নয়নের অভাব: ঐতিহ্য আজ অবহেলিত

 নারায়ণপুরের কৃষ্ণবলরাম মন্দিরে উন্নয়নের অভাব: ঐতিহ্য আজ অবহেলিত

More News


👌Pabitra Kumar Ganguli

বাঁকুড়া জেলার অন্তর্গত নারায়ণপুর গ্রামে অবস্থিত কৃষ্ণবলরাম মন্দিরটি এই অঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা। প্রায় দুই শতাব্দী আগে নির্মিত এই মন্দিরটি শুধুমাত্র ধর্মীয় গরিমা নয়, বরং স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক মূল্যবান নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রতিদিনই বহু ভক্ত এই মন্দিরে পূজা দিতে আসেন, আবার অনেক পর্যটক ও আগ্রহী মানুষ মন্দিরের স্থাপত্য এবং পরিবেশ দেখতে আসেন। তারা মন্দিরের সামনে ছবি তোলেন, সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সরকারিভাবে এই মন্দির বা তার সংলগ্ন এলাকার উন্নয়নে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ এখনো গৃহীত হয়নি।

মন্দিরে পৌঁছানোর রাস্তা আজও কাঁচা। বর্ষাকালে কাদা জলেতে চলাচল দুরূহ হয়ে ওঠে। ঢালাই রাস্তার কোনো ব্যবস্থা নেই, যার ফলে বয়স্ক ভক্তদের চলাফেরা অনেক সময় বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামবাসীরা পাকা রাস্তা নির্মাণের জন্য আবেদন করে আসছেন, কিন্তু বারবার আশ্বাস পেলেও বাস্তবায়নের কোনো দৃষ্টান্ত দেখা যায়নি।


মন্দির এলাকা এবং আশেপাশের গ্রামে সন্ধ্যার পর ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়, কারণ বিদ্যুৎ চলে গেলে অন্ধকারে ঢাকা পড়ে যায় গোটা অঞ্চল। পর্যাপ্ত সংখ্যক স্ট্রিট লাইট বা সোলার লাইট না থাকায় রাস্তায় চলাচল দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। নারায়ণপুরে এখনো পর্যন্ত কোনো সোলার লাইট স্থাপন করা হয়নি, যা আধুনিক সময়েও অত্যন্ত লজ্জাজনক একটি চিত্র। মন্দির এলাকা যেহেতু একটি ধর্মীয় ও পর্যটন কেন্দ্র, তাই এখানকার আলোকসজ্জা থাকা উচিত ছিল অত্যন্ত সুনির্বাচিত ও পর্যাপ্ত।


গ্রামে এখনও পানীয় জলের পর্যাপ্ত সুবিধা নেই। নারায়ণপুর গ্রামে এখনো পর্যন্ত একটি সোলার সাবমারসিবল পাম্প বসানো হয়নি। ফলে প্রতিদিন জলের জন্য স্থানীয়দের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। শীতকাল বা গ্রীষ্মকাল—সব ঋতুতেই জলের সংকট রয়ে গেছে। 


গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে এখন বিশেষভাবে দাবি উঠেছে—অন্তত দুটি সোলার লাইট এবং একটি সোলার সাবমারসিবল যেন দ্রুত সরবরাহ করা হয়। মন্দিরের সৌন্দর্য ও গুরুত্ব বিবেচনা করে দ্রুত পাকা রাস্তা তৈরি এবং আলোকায়নের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।


নারায়ণপুরের কৃষ্ণবলরাম মন্দির কেবল একটি পূজার স্থান নয়, এটি স্থানীয় জনজীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এখানে সংস্কৃতি, ধর্ম এবং ইতিহাস মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। সরকারের উচিত দ্রুত হস্তক্ষেপ করে মন্দির এবং এর পারিপার্শ্বিক অঞ্চলের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সাধন করা। প্রশাসনিক উদ্যোগ ছাড়া এই ঐতিহ্যবাহী স্থানের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব নয়। স্থানীয় বাসিন্দারা আশা করেন, তাদের বহুদিনের দাবিগুলি এবার বাস্তবে রূপ নেবে এবং নারায়ণপুরের কৃষ্ণবলরাম মন্দির তার প্রাপ্য মর্যাদা ফিরে পাবে।


Comments