আমিষ
----সৃজিতা পাল
ঠিকানা – বনমালিপুর / দ্বারিকা / বিষ্ণুপুর
>>>আরও পড়ুন
রাত ১২:৩০ সময় একা অফিস থেকে বাড়ি ফিরছিল দিশা হঠাৎ করে তার ফোন বেজে উঠলো। সেটা ছিল তার মা। দিশা ফোনটি রিসিভ করলো।
মা - হ্যালো, তুই এখন কোথায় ? বাড়ি ফিরেছিস?
দিশা - না এখনো ফিরিনি এখন রাস্তায় ।
মা - কিছু খাবার খেয়েছিস কি?
দিশা - না তবে যাওয়ার পথে দোকান থেকে নিয়ে নেব।
মা - দেখিস কিছু নিরামিষ খাবার নিবি নাহলে মনে আছে তোর দাদু
*মায়ের কথা শেষ হওয়ার আগেই সে বলল*
দিশা - হ্যাঁ হ্যাঁ জানি সেই আজগুবি গল্প সব । রাতের বেলা দাদু মাছ নিয়ে যাচ্ছিল । তাকে নাকি এক ভূত অনুসরণ করতে করতে তার বাড়ি পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। আর তাছাড়া তুমি তো জানো আমি আমিষ ছাড়া খেতে পারি না।
মা - আরে বাবা একটা দিনেরই তো ব্যাপার। আমার একটা কথা অন্তত শোন। রাতের বেলা আবার এই অমাবস্যার রাতে অনেক অশুভ শক্তি ঘুরে বেড়ায়।
দিশা - আরে মা এটা কলকাতা এখানে মানুষ থাকার জায়গা নেই আর ভূত-প্রেত। তোমার এই কথা আমি মানতে পারলাম না। রাখো তো
*এই বলে দিশা তার মায়ের ফোন টা রেখে দেয়। এবং একটা হোটেল এর সামনে আসে।*
দিশা - দাদা এখানে খাওয়ার কি কি আইটেম হবে?
হোটেলওয়ালা - ভেজ না নন-ভেজ?
দিশা - নন-ভেজ।
*হোটেলওয়ালা তাকে তার হোটেলের মেনু দেখায় ।*
দিশা - একটা ভেটকি মাছ ফ্রাই আর ছাড়তে চিকেন পকোড়া।
হোটলওয়ালা - ওকে।
*দিশা তার পার্সেল নিয়ে কিছুটা দূরে গিয়ে একটা ট্যাক্সি তে উঠে পড়ে ট্যাক্সি টি গিয়ে থামে একটা সরু গলির সামনে। সেখান থেকে তার বাড়ি এখনো দশ থেকে পনেরো মিনিট*
ড্রাইভার - ম্যাম, এখন থেকে এবার আপনাকে একা যেতে হবে এই গলির মধ্যে দিয়ে এই ট্যাক্সি টি যাবে না।
দিশা - আচ্ছা ঠিক আছে ।
*দিশা ড্রাইভারকে টাকা দিয়ে চলতে শুরু করলো সেই গলির দিকে চলতে চলতে পিছন থেকে শুনতে পায় অন্য কারোর পায়ের শব্দ সে পিছন ঘুরে দেখে কিন্তু কেউ সেখানে ছিল না । সে আবার চলতে শুরু করে কিন্তু সে আবার সেই পায়ের শব্দ শুনতে পায় সে ভয়ে দৌড়তে আরম্ভ করে কিন্তু সেই পায়ের শব্দ বাড়তেই থাকে। দিশা হঠাৎ চিৎকার করে উঠে*
দিশা - আঃ
*হঠাৎ সব কিছু নিস্তব্দ হয়ে যায় সে তার বোতল থেকে জল খায় এবং চোখেমুখে ছিটিয়ে নেই । কোথার থেকে যেন একটা বিশ্রী গন্ধ আস্তে থাকে সে চোখ তুলে দেখে কালো চাদরে থাকা এক অবয়ব বসে আছে সে তার কাছে যায় হঠাৎ চাদর মুড়ি দেওয়া অবয়বটি বললো*
অবয়ব - কিরে আমার ভাগের মাছটা আমায় দিবি না?
*স্ট্রীটলাইট গুলি হঠাৎ দপদপ করতে লাগলো। দিশা ভয় পেয়ে ছুটতে থাকে এবং বাড়ি পৌঁছে ঘরটি লক করে*
*বাড়ি পৌঁছে সে তার পোষা মাছগুলি কে খেতে দেয় তারপর সে পার্সেল টি খুলে নিজে খেতে আরম্ভ করে খাওয়া শেষ হওয়ার পর সে প্লাস্টিকগুলি বাইরে রাখতে একটা পঁচা গন্ধ আবার ওর নাকে আসে। তার বুঝতে দেরি হলো না যে এটা কি হচ্ছে। সে ধীরে ধীরে তার পিছনে দেখে । আবার সেই চাদর মুড়ি দেওয়া লোক*
অবয়ব - কি রে বললাম না আমার ভাগের মাছটা আমায় দিয়ে যা দিবি না?
*দিশা কোনো দিকে তাকিয়ে ছুটে তার ঘরে ঢুকে গেলো এবং এক মিনিটও নষ্ট না করে বেডরুমে ঢুকে লক দিয়ে দেয় সে বিছানাতে বসে এবং তার মাকে ফোনে সব কথাটা খুলে বলে *
মা - বলেছিলাম তোকে আগেই সাবধান করেছিলাম ওকে ওর ভাগের মাছটা দিয়ে দেয় ও নাহলে যাবে না ।
দিশা - মাছ? আমি তো খেয়ে নিয়েছি এখন আর কি দেবো?
মা - খেয়ে নিচ্ছিস ? পাগল নাকি ও যাবে না ওকে মাছ না দিলে। দাড়া তোকে যে হনুমান চালিসা দিয়েছিলাম সেটা আছে?
দিশা - সেটা তো library তে আছে।
*দিশার বেডরুমের দরজায় কেও নক্ করে*
তার হঠাৎ মনে পড়ে যে সে বাইরের দরজা লক করতে ভুলে গেছে সে সাহস করে দরজা খুলে তার পাশে তাকাই দেখতে পায় সেই অবয়ব। তবে তার মুখ এখন স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছিল। তার মুখ জ্বলন্ত চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসছে। দিশা অজ্ঞেন হয়ে পড়ে।*
*পরদিন সকালে তার মা এবং দাদা আসে দেখে তার ঘর খোলা তারা ভিতরে ঢুকে দেখে দিশা অজ্ঞেন হয়ে পড়ে আছে হলরুমে। তারা তাকে জল দেয় সে উঠে এবং সামনে দেখে তার পোষা মাছ আর নেয় তারা উধাও। দিশা বুঝতে আর দেরি হয় না যে তার মাছ কোথায় উধাও হয়েছে.....

Comments
Post a Comment