HOME> Lifestyle/News
আমার কাছে বাঙালির প্রকৃত শিক্ষক দিবস আজ
পবিত্র কুমার গাঙ্গুলী
আমার কাছে বাঙালির প্রকৃত শিক্ষক দিবস আজ। কারণ আজকের দিনেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেই মহান মানুষ, যিনি কেবল শিক্ষকই নন, বাঙালি জাতির পথপ্রদর্শক, মানবতাবাদী এবং সমাজ সংস্কারক—ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। বাংলার অজ্ঞানতা, কুসংস্কার আর অশিক্ষার অন্ধকার ভেদ করে তিনি প্রজ্বলিত করেছিলেন জ্ঞানের দীপশিখা। তাঁর অবদানের জন্যই বাঙালি সমাজ নবজাগরণের পথে হাঁটতে পেরেছিল।
বিদ্যাসাগরের জীবন ছিল ত্যাগ, সংগ্রাম এবং কর্মনিষ্ঠার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। মাতৃভক্তি ছিল তাঁর চরিত্রের এক উজ্জ্বল দিক—দারিদ্র্য হওয়া সত্ত্বেও মায়ের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তাঁর মানসিক দৃঢ়তা ছিল ইস্পাতসম, কোনো বাধা, কোনো বিরোধিতাই তাঁকে লক্ষ্যপথ থেকে সরাতে পারেনি। চারিত্রিক দৃঢ়তায় তিনি ছিলেন হিমালয়ের মতো অটল।
শিক্ষা বিস্তারে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। বিদ্যালয় স্থাপন, বাংলা ভাষায় পাঠ্যপুস্তক রচনা, ছাত্রদের জন্য সহজবোধ্য শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন—সব কিছুতেই তিনি অগ্রগণ্য। শুধু তাই নয়, সমাজের অমানবিক প্রথা—বিশেষত বিধবা বিবাহ প্রবর্তন ও বহুবিবাহ বিরোধী আন্দোলনে তাঁর অটল অবস্থান তাঁকে মানবপ্রেমের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আজ তাঁর জন্মদিনে আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে তাঁকে স্মরণ করি। বিদ্যাসাগর কেবল অতীতের এক মহান মানুষ নন, তিনি আমাদের চিরন্তন আলোকবর্তিকা। তাঁর জীবন আমাদের শেখায়—শিক্ষা শুধু বইয়ের অক্ষরে সীমাবদ্ধ নয়, শিক্ষা হলো মানবিকতা, আত্মত্যাগ আর সমাজের কল্যাণে কাজ করার শক্তি।
আজকের দিনে তাই আমরা সশ্রদ্ধ প্রণাম জানাই বাংলার নবজাগরণের এই মহাপুরুষকে। তাঁর চিন্তাধারা ও কর্ম আমাদের প্রতিনিয়ত অনুপ্রেরণা দিক, আর তাঁর দেখানো পথেই আমরা এগিয়ে যাই নতুন প্রজন্মের শিক্ষা ও মানবিক উন্নতির জন্য।

Comments
Post a Comment